২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

আইডি কার্ড লুকিয়েও রেহাই পাননি দৈনিক বরিশাল সম্পাদক সহ সাংবাদিকরা

আপডেট: আগস্ট ৫, ২০২৫

অনলাইন নিউজঃ গত বছরের জুনের প্রথমদিকে কোটা সংস্কারের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। ছাত্র-জনতার ৩৬ দিনের পুরো আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে নানান প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এগুলো উতরে বরিশালের গণমাধ্যমকর্মীরা কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করতে সক্ষম হয়েছি।

তবে আন্দোলন যত তীব্রতর হতে শুরু করে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরে যেন খড়্গ নেমে আসে। হঠাৎ করে যেন আন্দোলনকারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরে চটে যান। কেমন যেন শত্রু ভাবা শুরু করে।

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ করে অপ্রীতিকর মন্তব্য, টিভিতে লাইভ চলাকালীন অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা, লাইভ শুরুর আগে নিউজ প্রকাশের বিষয়ে প্রতিবেদককে সতর্ক করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। 

আন্দোলনের ৩৬ দিনের মধ্যে বরিশালের সাংবাদিকদের ভয়ংকর দিন কেটেছে ১৬ এবং ১৭ জুলাই। ১৬ জুলাই থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ করে তার প্রতিবেদককে খোঁজা এবং খুঁজে পেতে পুরস্কার ঘোষণা করা, ধরে নিয়ে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে বলার মতো ঘটনা ঘটে। এদিন যমুনা টেলিভিশনের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের হামলার শিকার হন যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ।

১৭ জুলাই দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের নিউজ কাভার করতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের ভয়ংকর রূপ দেখতে পাই। এই দিন টানা ১০ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্য থেকে নিরাপদে বের হয়ে আসা অনেকটা অসম্ভব ছিল।

একদিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপকারীদের পাশ দিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছিলাম, অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের হামলার শিকারের আতঙ্ক কাজ করছিল। এই দিন ছাত্র নামধারী কিছু অছাত্র দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদকে লক্ষ করে ইট ছুড়ে তাকে গুরুতর আহত করে। ডিবিসি নিউজের মাল্টিমিডিয়ার প্রতিনিধি ওমর ফারুক ও তার ক্যামেরাপারসনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করে। পরিস্থিতি এমনই যে ওমর ফারুক ও তার ক্যামেরাপারসনকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি। একপর্যায়ে ঘুটঘুটের অন্ধকার রাতে মোটরসাইকেলে থাকা গণমাধ্যমের স্টিকার খুলে, গলায় থাকা আইডি কার্ড গোপন করে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন।

তবে ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের। পরে পুরো সময়ে আন্দোলনকারীদের চোখ এড়াতে সাংবাদিকদের আইডি কার্ড লুকাতে হয়েছে। আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে আইডি কার্ড দেখাতে হয়েছে। ১৭ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত টেলিভিশন চ্যানেল বাদে অন্য সব গণমাধ্যমকর্মীদের আইডিকার্ড কখনো লুকিয়ে রাখতে হয়েছে আবার আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সামনে শো করতে হয়েছে। এভাবে পুরো জুলাই আন্দোলন কাভার করতে হয়েছে। এই পরিস্থিতি আমিসহ অনেক জ্যেষ্ঠ সহকর্মী প্রথমবার মোকাবিলা করেছেন। এমন পরিস্থিতি আসবে কি না, তাও আমাদের জানা নেই। সূত্রঃখবরের কাগজ

226 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন