আপডেট: ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫
অনলাইন নিউজঃ ৩৬ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের কারণে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এমন অবস্থায় তিনি ঋণখেলাপি না হতে এই টাকা দেশের মানুষের কাছে চেয়েছেন।
মান্নার ভাষায়, এক বছরের জন্য যদি কেউ এই টাকা তাকে দেন তাহলে তিনি খেলাপি ঋণের তালিকা থেকে বের হয়ে আসতে ও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সেই সঙ্গে অভিযোগ করেছেন, ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করে ও আদালতে গিয়ে তিনি ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনের বিএনপি নেতাদের প্রভাব রয়েছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মান্না এসব কথা জানান। এসময় সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি জানান, তিনি শিবগঞ্জে একটি হিমাগারের ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ব্যবসার সহযোগী নাজমুল কাদির শাহজাহান দেশ ছেড়ে পালান। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। ব্যবসার জন্য শিবগঞ্জের ইসলামী ব্যাংক থেকে যে ৩৬ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল তাতে স্বাক্ষরকারী নাজমুল। এখন তিনি স্বাক্ষর করতে না পারায় পুনঃতফসিলের আবেদন করা হলেও আদালতের মাধ্যমে তা আটকে দেয় একটি শ্রেণি। উদ্দেশ্য যাতে মান্না বগুড়া-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে না পারেন।
মান্না জানান, এ বিষয়ে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) আদালতে একটি রায় হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। রায়টি যদি তার অনুকূলে না আসে তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আর অনুকূলে রায় না এলে তিনি আরও আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন বলে উল্লেখ করেন।
এই পরিস্থিতিতে সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘সাধারণ নিয়ম আছে, ব্যাংকে ওই টাকা ফেরত দিলে এখান থেকে (ঋণখেলাপি) বেরিয়ে আসা যায়। মানুষ আমাকে ভালোবাসে, সেই বিশ্বাস থেকে যদি কেউ সাহায্য করেন, ব্যবসাটা আছে, সেই ব্যবসা থেকে আমি টাকা পরে বের করে দিতে পারবো। এক বছরের জন্য কেউ যদি সাহায্য করেন, আমি এটা থেকে যদি বেরিয়ে আসতে পারি, তাহলে নির্বাচনটি করতে পারবো। আমি নির্বাচনটি করতে চাই। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই নির্বাচন করা উচিত ও স্বাভাবিক শক্তিতে নির্বাচনটি করতে চাই।’
মান্না ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করেছিলেন জানিয়ে বলেন, যেহেতু আমি স্বাক্ষরকারী নই, তাই কিছু করতে পারছিলাম না। তখন আমি আদালতে গেছি। আমার পক্ষে আদেশ গেছে, যাতে আমার নামটি খেলাপিতে না থাকে। কিন্তু ওই আদেশটাও স্থগিত করা হয়েছে। বিচারব্যবস্থা এখনো প্রভাবিত।’
চেম্বার জজ আদালতে যাবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের ডেকে এই কথা বলতে চাইনি। আমি দুই বছর জেলে কাটিয়েছি। আমাকে ঠিকভাবে নোটিশও দেওয়া হয়নি।’
‘আমি চাই আমার সিআইবিটা (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে ঋণখেলাপিদের তথ্য সংরক্ষণ) যাতে স্থগিত করা হয়। আমি যাতে নির্বাচন করতে পারি। এটা পাওয়া আমার অধিকারে রাখি। যেহেতু পুনঃতফসিল আবেদন করা হয়েছে, আমি ঋণখেলাপি থাকতে পারি না। আমাকে যাতে সময়টা দেওয়া হয়। আমার নামটা যেন ঋণখেলাপির তালিকা থেকে বাদ পড়ে,’ যোগ করেন মান্না।
এ নিয়ে কথা হলে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি জাগো নিউজকে বলেন, তার আবেদন ব্যাংক গ্রহণ করে ঋণ পুনঃতফসিলের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু একটি মহল ষড়যন্ত্র করে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত নিয়ে গেছে। উদ্দেশ্য একটিই, তিনি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।তথ্যসূত্রঃজাগোনিউজ