২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালে টিসিবির ডিলার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম

আপডেট: এপ্রিল ২২, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালে টিসিবির ডিলার নিয়োগের বিষয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্রীয় এ বাণিজ্য সংস্থাটির ভোগ্যপণ্য বিক্রির ডিলার নিয়োগের আগে জেলা প্রশাসন থেকে ব্যবসায়ীদের মুদি-মনোহরির দোকানসহ চলমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে তদন্ত করার কথা। কিন্তু স্থায়ী দোকানঘর নেই অথচ কাগজ-কলমে মুদি-মনোহরি ব্যবসায়ী এমন ব্যক্তিদের ডিলার নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

 

যা সরকারি নীতিমালা পরিপন্থী বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক বিবেচনাতেও টিসিবি’র ডিলার নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। ফলে এবার বেশ কিছু ডিলার টিসিবি পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। টিসিবির পণ্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রির জন্য বরিশাল মহানগরীতে ৭০ জনসহ জেলায় ১০৭ জন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

 

এসব ডিলারদের মাধ্যমেই বরিশাল মহানগরীতে প্রতিদিন ৮টি ট্রাকে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চালু করলেও ইতোমধ্যে পেঁয়াজ, ছোলাবুট ও খেজুর বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। বরিশাল মহানগরীর বাইরে প্রতিটি জেলায় ২টি ও জেলা সদরের বাইরে দুটি উপজেলাতে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি।

কিন্তু স্থায়ী মুদি মনোহরি ব্যবসায়ীরাই টিসিবির ডিলার হিসেবে নিয়োগ পাবেন এমন শর্ত নীতিমালায় উল্লেখ থাকলেও কমপক্ষে ২৫ জন ডিলার আছেন যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী নন। তাদের কোথাও কোন দোকান ঘর পর্যন্ত নেই। শুধুমাত্র একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে নানামুখী তদবিরে ডিলার নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি এরকম দু’জন ডিলার চিহ্নিত করে তাদের পণ্য সরবরাহ স্থগিত রাখেন বরিশাল টিসিবি কর্তৃপক্ষ। বরিশাল টিসিবি-ওএমএস ডিলার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, টিসিবির ডিলার নিয়োগের প্রধান শর্ত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্থায়ী দোকান ঘর থাকতে হবে। দুটি কারণে এ নিয়ম রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এবং ট্রাকে ভ্রাম্যমাণ বিক্রি বন্ধ থাকলে ওই ডিলার যাতে নিজ দোকান ঘর থেকে ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, অন্তত ২৫ জন ডিলারের দোকান ঘর নেই। তারা রহস্যজনকভাবে ডিলারশিপ পেয়েছেন এবং বিক্রির জন্য তাদের নিয়মিত পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

বরিশাল টিসিবি-ওএমএস ডিলার কল্যাণ সমিতির এনামুল হক বলেন, ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পর অবিক্রিত পণ্য সংশ্লিষ্ট ডিলার তার নিজ দোকান ঘরে বিক্রি করার নিয়ম রাখা হয়েছে। যেসব ডিলারের নিজস্ব দোকান ঘর নেই তারা নিশ্চিত ওই পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

 

নীতিমালা ভেঙে কিছু সংখ্যক ডিলার নিয়োগ হতে পারে এমনটা স্বীকার করে টিসিবি’র বরিশাল অফিস প্রধান মো. শহিদুল ইসলাম বলেছেন, চার মাস আগে তিনি বরিশালে যোগদান করেছেন। সম্প্রতি তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।

 

কয়েকজন ডিলারের অব্যবসায়ীমূলক আচরণ দেখে তিনিও বুঝতে পেরেছেন এরা আসলে মৌসুমী ব্যবসায়ী। এসব ডিলাররা ক্রেতাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের পর কমিটি গঠন করে যেসব ব্যবসায়ীদের স্থায়ী দোকান ঘর নেই সেগুলো চিহ্নিত করা হবে। পরবর্তীতে তাদের ব্যাপারে টিসিবির প্রধান কার্যালয়কে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

381 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন