আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২৫
অনলাইন নিউজ: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ সকল নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ও মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রংপুর মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি।
মিছিল শেষে জাতীয় পার্টির তিন নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাতীয় বেঈমান আখ্যায়িত করে তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে দলের নেতা-কর্মীরা। সেইসঙ্গে ওই তিন নেতাকে রংপুর বিভাগে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার বিকেলে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে দলের কো চেয়ারম্যান সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে একটি বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। মিছিলকারীরা জাপা থেকে বহিষ্কৃত আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুর ছবি দিয়ে কুশপুত্তলিকা বানিয়ে জুতা স্যান্ডেল লাগিয়ে সেই কুশপুত্তলিকা বহন করে নগরীর পায়রা চত্বরে নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তাদের কুশপুত্তলিকা পদদলিত করে বেঈমান আখ্যায়িত করে।
মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফিরে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন জাপার কো চেয়ারম্যান ও সাবেক সিটি মেয়র এবং মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা জাপার আহ্বায়ক আজমল হোসেন লেবু ও জাপা নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে সাবেক সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন বলেন, “আমাদের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে একটি খুনসহ ১৮টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সারাদেশে দলের নেতা-কর্মীদের নামে শত শত গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। দেশের এক কোটি মানুষকে ওইসব মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ফলে পুলিশও তদন্ত করে কুলকিনারা পাচ্ছে না। অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।”
দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল অমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুকে বেঈমান আখ্যায়িত করে তাদের রংপুর বিভাগে অবাঞ্চিত ঘোষণা দিয়ে মোস্তফা বলেন, “এদের রংপুর বিভাগের যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানে বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে তাদের ধরে এনে দিগম্বর করে যা করার তাই করা হবে। কারণ এরা জাতীয় বেঈমান। এরা শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে নির্বাচন করেছে। এরা এখন জাতীয় পার্টিকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
সাবেক সিটি মেয়র বলেন, “বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে চরমভাবে ব্যর্থ। দেশে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। মববাজি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি চলছে। মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সারাদেশে মব ভায়োলেন্সের নামে হত্যা, গুম চাঁদাবাজি সন্ত্রাসের মহোৎসব চলছে। কয়েকদিন আগে রংপুরের তারাগজ্ঞে দলিত সম্প্রদায়ের দুজনকে চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নগরীর বুড়িরহাটে ১২ বছরের শিশুকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। আইনশৃংখলার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে দিনদুপুরে মানুষ খুন করা হলেও কোনো বিচার হচ্ছে না। দেশে মবতন্ত্র চললেও সরকার তা প্রতিরোধে ব্যর্থ।”
তিনি আরও বলেন, “আমি যে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবো, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারোরই জীবনের নিরাপত্তা নেই।”
মোস্তফা বলেন, “বর্তমান সরকার আগামী বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে। অথচ এনসিপির নেতা নাসির বলছেন, নির্বাচন হবে না। এনসিপির এত বড় স্পর্ধা হয় কিভাবে। তারা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী?”
দেশের আইনশৃংখলার যে অবস্থা তাতে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব কি-না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে মোস্তফা বলেন, “যদি সেনাবাহিনী এবং পুলিশ দায়িত্ব নিয়ে কয়েক দফায় নির্বাচন করে তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।”