১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

বরিশালে কলেজ ছাত্র সুজন’র দোভাষী “বঙ্গ” রোবট

আপডেট: এপ্রিল ২৯, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার এক কলেজ ছাত্র আবিস্কার করলো বাংলা ও ইংরেজীতে কথা বলা রোবট। দোভাষী রোবটটির নাম ‘বঙ্গ’। এটা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জই¥শত বার্ষিকী উপলক্ষে তৈরী করায় এর নাম রাখা হয়েছে বঙ্গ রোবট। যে কিনা বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই কথা বলতে পারে। শুধু তাই নয়, রবিন বলতে পারে তাকে সৃষ্টি করা ক্ষুদে বিজ্ঞানীর নামও।

তাছাড়াও সে তার দেশের নাম, প্রধানমন্ত্রীর নাম, রাষ্ট্রপতির নামসহ যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে অকপটে। এমনকি, তার আশপাশে আগুন লাগলে সে খবর দিতে পারবে ফায়ার সার্ভিসে এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার অবস্থান দেখতে পাবে গুগল ম্যাপে।

আর এই অত্যাধুনিক রোবটটির আবিষ্কারক হলেন বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের জয়দেব পাল ও সবিতা রানী পালের ছেলে সুজন পাল।
মা-বাবার দুই সন্তানের মধ্যে সুজন বড়। সুজন পাল সরকারি গৌরনদী কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।

ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করতেন বিজ্ঞান বিষয়ক আগ্রহ থেকেই। শুধু অংশই নিতেন তা নয়, সেসব প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতে অনেক। আর এসব কাজে থাকতে থাকতে এক সময় তার মনে হলো অন্য অনেকের মতো তিনিও একটা রোবট বানাতে পারেন। তবে তার রোবট হবে গতানুগতিক রোবট থেকে একটু আলাদা।

আর সে লক্ষ্য নিয়েই ৪ মাস চেষ্টা করে রোবট তৈরির করেছেন সুজন। রোবটের নাম রাখা হয় বঙ্গ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে তৈরী করায় এর নাম রাখা হয়েছে বঙ্গ। এরপর থেকেই বঙ্গর পরিচিতি ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশজুড়ে।

ক্ষুদে বিজ্ঞানী সুজন পাল বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এবং ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভিডিও দেখেই রোবট বঙ্গকে এভাবে তৈরি করতে পেরেছি। অন্যকে প্রাইভোট পড়িয়ে ও পরিবার থেকে দেওয়া টাকা জমিয়ে ৪০হাজার টাকা দিয়ে ৪মাস ধরে রোবট তৈরী করা হয়েছে। আগামীতে আমি আরো উন্নত করতে কাজ করছি।

বর্তমানে তার দৃষ্টিশক্তি নেই, আগামীতে সে সকলকে দেখতে পারবে। সেই সঙ্গে কারো সঙ্গে একবার পরিচয় হলে তাকে পরবর্তীতে দেখলে চিনতে পারবে এবং বিভিন্ন সমস্যা নিজে দেখে সমাধাণ করতে পারবে।

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমার এই রোবট অনেক কিছু নিজে নিজেই শিখতে পারে। রোবট একটি যান্ত্রিক কিংবা কাল্পনিক, কৃত্রিম কার্যসম্পাদক। রোবট সাধারণত একটি ইলেক্ট্রো-যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যার কাজকর্ম, অবয়ব ও চলাফেরা। রোবট বিভিন্ন কাজে মূলত মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

রোবট শব্দটির উৎপত্তি চেক শব্দ ‘রোবোটা’ থেকে, যার অর্থ ফোরসড লেবার বা মানুষের দাসত্ব কিংবা একঘেয়মি খাটুনি বা পরিশ্রম করতে পারে এমন যন্ত্র। রোবট হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত একটি স্বয়ংক্রীয় ব্যবস্থা, যা মানুষ যেভাবে কাজ করে ঠিক সেই ভাবেই কাজ করতে পারে অথবা এর কাজের ধরন দেখে মনে হবে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে। রোবটের বহুমাত্রিক সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব।

সহজ ভাষায় বলা যায়, যে যন্ত্র নিজে নিজে মানুষের কাজে সাহায্য করে এবং নানাবিধ কাজে মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাই রোবট। রোবট প্রাকৃতিক নয়, কৃত্রিম পরিবেশ অনুভব করার ক্ষমতা আছে। পরিবেশের বস্তু নিয়ে কাজ করতে পারে।

কিছুটা বুদ্ধিমত্তা আছে, যার সাহায্যে পরিবেশ বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রোগ্রামযোগ্য। ঘুরতে পারে ও স্থানান্তর করতে পারে।

এব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো.আবুল হাশেম সাংবাদিকদের বলেন, বোরট আবিস্কারক সুজন পালের যদি এই কাজের জন্য অর্থনৈতিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে সে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ে অর্থিক সহযোগীতার আবেদন করলে আমি নিজে সুপারিশ করব।

351 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন