আপডেট: জুন ২, ২০২১
বিজয় ডেস্ক ॥ দেশের অর্থনীতিকে যারা লুটপাট করছে সরকার তাদেরই করোনাকালীন প্রণোদনা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগে আরও বলেন, দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তার জন্য সরকার কিছুই করছে না।
আজ বুধবার ঢাকা জজ কোর্টে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এই অভিযোগ করেন।
করোনায় আদালত বন্ধ থাকায় আইনজীবীরা বিপাকে পড়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাঁরা অত্যন্ত কষ্টে আছেন। এদের জন্য কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই। তাহলে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেটা কীসের?
মানুষকে তারা বোকা বানিয়েছে! ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হবে সবাইকে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সরকারের কী দরকার? ব্যাংক থেকে নেবে। এটা প্রণোদনা হলো কোত্থেকে? এটা প্রণোদনা নয়।’
ফখরুল বলেন, ‘প্রণোদনা তাকেই বলে, সরকার দুঃসময়ে আপনাকে যে আর্থিক সাহায্যটা করছে, সেটা ফেরত না নেওয়া। আপনি সেই প্রণোদনার টাকা কাজে লাগাবেন। আমরা প্রস্তাবনায় বলেছিলাম, দিন আনে দিন খায় মানুষগুলোকে ১৫ হাজার টাকা করে তিন মাস অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধার কৃষক বলছেন, তিনি সবজি চাষ করে বিক্রি করতে পারছেন না। কারণ ট্রাক যায় না, ট্রাক আসে না। সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর চেয়ে আমাদেরকে মেরে ফেললে ভালো হতো। তাহলে কাকে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার? যে লোকগুলো লুট করছে, দেশের অর্থনীতিকে একেবারে শুন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তাদেরকে দিচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, করোনার অভিঘাতে প্রায় ছয় কোটি মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এই মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে, অবশ্যই তাদের (দরিদ্রদের) কাছে টাকা পাঠাতে হবে। কিন্তু সরকার এখনও একইভাবে তেলে মাথায় তেল দিচ্ছে। অর্থাৎ, যাদের ইন্ডাস্ট্রি-টিন্ডাস্ট্রি আছে তাদেরকে আবারও প্রণোদনা দিচ্ছে। এই যে দিন আনে দিন খায় মানুষগুলো, তাদেরকে কিছুই দিচ্ছে না।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আগামীকাল বাজেট দিতে যাচ্ছে এই সরকার। আজকে অর্থমন্ত্রী একটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে বলেছেন, সব ধরনের মানুষকে মাথায় রেখে বাজেট করছেন। আ হ ম মুস্তফা কামাল সাহেব ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালো বোঝেন। অর্থনীতি কতটুকু বোঝেন তার নিদর্শন আমরা খুঁজে পাইনি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মনগড়া প্রবৃদ্ধির হার দিচ্ছেন আর বলছেন, উন্নয়ন। উন্নয়ন সেটা নয়। উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়, সে যেন ভালো খেতে পায়, বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে পারে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক থাকে—সেটাকে বলে উন্নয়ন। এমন উন্নয়ন করেছেন, হাসপাতালে বেড নেই। একটা হাসপাতাল বানিয়েছেন কোভিডের সময়ে, ওইটা রাতের মধ্যে উধাও হয়ে গেল! ব্যবসা। এটা তো কমিশন এজেন্ট সরকার, জনগণের সরকার না।’
বার ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুম আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোন্দকার মো. হযরত আলী, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক নেতাদের মধ্যে আজিজুল ইসলাম খান বাচ্চু, মহসিন মিয়া, খোরশেদ আলম, হোসেন আলী খান হাসান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।