৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার

কলপাড়ায় মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরলেও ধরছে না পুলিশ !

আপডেট: মে ১৫, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জমির বায়না করতে যেয়ে ছিনতাই ও মারধরের শিকার হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। ছিনতাইকারীরা এ সময় ব্যবসায়ী আবু জাফরের সাথে থাকা নগদ ১১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং এ বিষয়ে আইনী পদক্ষেপ নিলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। গত ১১ মে মঙ্গলবার কলাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবু জাফর এ ঘটনায় ১২ মে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৫জনকে নামধারী ও অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং সিআর ৪৮৪/২১)। বিজ্ঞ আদালত কলাপাড়া থানার ওসিকে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা আদেশ দেন। মামলা দায়েরের পরপরই একজন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলা বারের সামনে কম্পিউটার ও ফটোস্ট্যাট ব্যবসায়ী আবু জাফর ২নং স্বাক্ষী পটুয়াখালী বারের শিক্ষানবীশ আইনজীবী মোঃ নেপোলিয়ান এর কাছ থেকে জমি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। যার মধ্যস্থকারী হিসেবে কাজ করেন ১নং আসামী কলাপাড়া ধানখালী উপজেলার মৃত আমির আলী সন্যামতের পুত্র মোঃ দেলোয়ার হোসেন সন্যামত।

পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১১ মে ব্যবসায়ী আবু জাফর ১নং আসামী দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে জমি বায়না করার জন্য কলাপাড়া যান। এ সময় তার কাছে ৫ লাখ টাকা ছিল। পরে উত্তরা ব্যাংক কলাপাড়া শাখা থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংক কলাপাড়া শাখা থেকে আরো ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। মোট ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে ১নং আসামী দেলোয়ার হোসেন এর সাথে কলাপাড়া উপজেলার নাচনাপাড়া চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ডের ভেতরে যান।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২নং আসামী মোঃ মাহাবুব সন্যামত, ৩নং আসামী পাভেল, ৪নং আসামী মেহেদী হাসান ও ৫নং আসামী আবুল বাসারসহ আরো ৫/৬ জন সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকে। সেখানে যাওয়ার সাথে সাথেই আসামীরা আবু জাফরের পথরোধ করে এবং ১নং আসামী ধারালো ছোরা আবু জাফরের গলায় ঠেকিয়ে খুনের ভয় দেখায় এবং অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতারি পেটাতে থাকে।

এক পর্যায়ে তারা আবু জাফরের সাথে থাকা ১১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আবু জাফরের ডাকচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়ে এবং যাওয়ার সময় এ ঘটনায় কোন আইনী পদক্ষেপ নিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

জমির মালিক মোঃ নেপোলিয়ান জানান, ঘটনার দিন তাকে বায়না করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে আবু জাফরকে বিমর্ষ দেখতে পান এবং টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা জানতে পারেন।

মামলার বাদী আবু জাফর জানান, ঘটনার পরপরই কলাপাড়া থানায় তিনি মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে তিনি কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করলে আদালত কলাপাড়া থানার ওসিকে মামলাটি এজাহারের আদেশ দেন। আবু জাফর অভিযোগ করেন, মামলার পর একজন আসামী গ্রেফতার করা হলেও অন্যান্য আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করছেনা পুলিশ। এছাড়া কোন টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তিনি অভিযোগ করেন, মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে থানা পুলিশ।

আসামী না ধরার বিষয়টি অস্বীকার করে কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আসামীরা যতই প্রভাবশালী হোক তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে একজন আসামী গ্রেফতার হলেও মামলা তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা সম্ভব নয়।

এদিকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবু জাফর জানান, তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

1045 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন